সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ঠেকাতে ‘কন্টেন্ট ফিল্টারিং’ প্রকল্পের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আজ বুধবার হোটেল রেডিসনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার ১৮তম পলিসি এবং রেগুলেটরি ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ব্যক্তি স্বাধীনতা বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বুধবার মন্ত্রী বলেন, বিষয়টা হচ্ছে আপনার কাছে হাতিয়ার আছে, এ হাতিয়ার কিভাবে ব্যবহার করবেন। আমরা প্রযুক্তি গ্রহণ করছি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা কোনো স্বাধীনতা হরণ করতে চাচ্ছি না। তবে স্বাধীনতার নাম যদি কিছু করা হয়, যা স্বাধীনতা হরণ, সেটা তো প্রটেক্ট করতে হবে। গত শনিবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মৃত্যুর গুজব ফেসবুকে ছড়ানো হয়। এরপর ২৪ ঘণ্টার জন্য সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর জি ও থ্রি-জি সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।গত সোমবার মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সোশাল মিডিয়ায় অপপ্রচার ঠেকাতে ‘কন্টেন্ট ফিল্টারিং’ এর একটি প্রকল্পের কাজ শুরুর কথা বলেছিলেন। ইন্টারনেটকে একদিকে প্রচণ্ড সম্ভবনাময় আরেকদিকে প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহার করা নানা ধরনের অপকর্ম করা হয় ব্যক্তি, সরকার বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। ফলে ইন্টারনেট লাগামহীনভাবে ব্যবহার করা হোক কোনো রাষ্ট্রই চাইতে পারে না। আমরা ইন্টারনেটের ভালোটা চাই কোনোভাবেই এর অপব্যবহার চাই না। বিশেষ করে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, তখন রাষ্ট্র কোনো সময়ই নিশ্চুপ থাকতে পারে না। ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, যা নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ।

এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কন্টেন্ট ফিল্টারিং প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে ধরনের অপকর্ম বা অপরাধ করা হয় তা খুঁজে বের করা, চিহ্নিত করা এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কবে নাগাদ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখন কাজ শুরু করেছি, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফলাফল দিতে পারব। অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বক্তব্য রাখেন। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার ১৮তম পলিসি এবং রেগুলেটরি ফোরামে এ অঞ্চলের জন্য উচ্চ পর্যায়ের টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সংক্রান্ত নীতি এবং নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের জন্য টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি সংক্রান্ত কৌশলপত্র প্রণয়নের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হবে এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে উদীয়মান প্রযুক্তিসমূহের প্রবণতাসহ পলিসি, রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জ ও উদ্ভাবন বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।